সারাংশ ও সারমর্ম

ক্রোধ মানুষের পরম শত্রু সারাংশ

ক্রোধ মানুষের পরম শত্রু। ক্রোধ মানুষের মনুষ্যত্ব নাশ করে। যে লোমহর্ষক কান্ডগুলি পৃথিবীকে নরকে পরিণত করিয়াছে, তাহার মূলেও রহুয়াছে ক্রোধ।ক্রোধ যে মানুষকে পশুভাবাপন্ন করে,তাহা একবার ক্রুদ্ধ ব্যক্তির মুখের প্রতি দৃষ্টিপাত করিলেই স্পষ্ট প্রতীয়মান হয়। যে ব্যক্তির মুখখানা সর্বদা হাসিমাখা, উদারতায় পরিপূর্ণ, দেখিলেই তোমার মনে আনন্দ ধরে না, একবার ক্রোধের সময় সেই মুখখানির দিকে তাকাইও; দেখিবে, সে স্বর্গের সুষমা আর নাই নরকাকাগ্নিতে বিকট রুপ ধারণ করিয়াছে।সমস্ত মুখ কি এক কালিমায় ঢাকিয়া গিয়াছে। তখন তাহাকে আলিঙ্গন করা দূরে থাকুক, তাহার নিকটে যাইতেইও ইচ্ছা হয় না।সুন্দরকে মুহূর্তের মধ্যে কুৎসিত করিতে অন্য কোন রিপু ক্রোধের ন্যায় কৃতকার্য হয় না।

সারাংশঃ ক্রোধ মানুষের সর্বাপেক্ষা রড় রিপু। এটা মানুষের মনুষ্যত্ব হরণ করে তার হাসিমাখা রমনীয় ও কমনীয় মুখখানিকে নরকের কালিমায় ঢেকে দেয়। মুহূর্তের মধ্যে সুন্দর মুখখানা ধারণ করে এক বিকট রুপ। তখন সে যে কোনো লোমহর্ষক কান্ড ঘটাতে দ্বিধাবোধ করে না।

 

কোনো সভ্য জাতিকে অসভ্য করার ইচ্ছা যদি তোমার থাকে সারাংশ

কোনো সভ্য জাতিকে অসভ্য করার ইচ্ছা যদি তোমার থাকে তাহলে তাদের সব বই ধ্বংস কর এবং সকল পন্ডিতকে হত্যা কর, তোমার উদ্দেশ্য সিদ্ধ হবে।লেখক, সাহিত্যক ও পন্ডিতেরাই জাতির আত্মা। এই আত্মাকে যারা অবহেলা করে, তারা বাঁচে না। দেশকে বা জাতিকে উন্নত করতে চেষ্টা করলে, সাহিত্যের সাহায্যেই তা করতে হবে। মানব মঙ্গলের জন্য যত অনুষ্ঠান আছে, তার মধ্যে এটাই প্রধাণ ও সম্পূর্ণ। জাতির ভেতর সাহিত্যের ধরা সৃষ্টি কর, আর কিছুর আবশ্যকতা নেই।

সারাংশঃ কোনো সভ্য জাতির উন্নয়নের প্রধাণ মাপকাঠি হলো, তাদের সাহিত্য অনুশীলন ও বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন। কারণ বুদ্ধিজীবীরাই জাতির প্রাণ। তাই জাতির কল্যাণের জন্য উন্নত সাহিত্যের ধারা সৃষ্টি করতে হবে।

তোমারি ক্রোড়েতে মম পিতামহগণ সারমর্ম

তোমারি ক্রোড়েতে মম পিতামহগণ

নিদ্রিত আছেন সুখে জীবলীলাশেষে,

তাদের ঘোষিত, অস্থি সকলি এখন

তোমার দেহের সঙ্গে গিয়েছে মা মিশে,

তোমার ধূলিতে পড়া এ দেহ আমার

তোমার ধূলিতে কালে মিশিবে আবার।

সারমর্মঃ মানুষ মরণশীল। জন্মভূমির আলো- বাতাসে লালিত মানুষ মৃত্যুর পর মাটির কোলে শেষ আশ্রয় নেয়। বংশ পরম্পরায় যুগ যুগ ধরে ধুলির মানুষ ধুলিতেই মিশে যাচ্ছে। আমরাও আমাদের পূর্বপুরুষদের মতো মৃত্যুর পর মাটিতেই মিশে যাবো।

 

 

সারমর্ম ক্ষমা যেথা ক্ষীণ দুর্বলতা

ক্ষমা যেথা ক্ষীণ দুর্বলতা,

হেরুদ্র নিষ্ঠুর যেন হতে পারি তথা।

তোমার আদেশে, যেন রসনায় মম

সত্যবাক্য জ্বলি ওঠে খর খড়গ সম

তোমার ইঙ্গিতে, রাখি তব মান

তোমার বিচারাসনে লয়ে নিজ স্হান,

অন্যায় যে করে আর অন্যায় যে সহে

তব ঘৃণা যেন তারে তৃণ সম দহে।

সারমর্মঃ ক্ষমাশীলতা মানুষের মহৎগুণ হলেও ন্যায় এবং সত্য প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে কঠোর হওয়া উচিত। অন্যায়কে সহ্য করা প প্রশ্রয় দেয়া দুটোই সমান অপরাধ। সুতরাং এ ব্যাপারে আমাদের আপোষহীন মনোভাব থাকতে হবে।

সারাংশ তুমি জীবনকে সার্থক-সুন্দর করিতে চাও?

তুমি জীবনকে সার্থক ও সুন্দর করিতে চাও?ভালো সে জন্য তোমাকে প্রাণান্ত পরিশ্রম করিতে হইবে।মহৎ কিছু লাভ করিতে হইলে কঠোর সাধনার দরকার। তোমাকে অনেক দুঃখ সহ্য করিতে হইবে। অনেক বিপদ -আপদের সম্মুখীন হইতে হইবে। এইসব তুচ্ছ করিয়া যদি তুমি লক্ষ্যের দিকে ক্রমাগত অগ্রসর হইতে পার তবে তোমার জীবন সুন্দর হইবে।আরি আছে, তোমার ভিতরে এক”আমি আছে। সে বড় দুরন্ত। তাহার স্বভাব পশুর মতো বর্বর ও উশৃঙ্খল। সে কেবল ভোগ বিলাস চায়, সে বড় লোভী। এই ‘আমি’ জয় করিতে হইবে। তবেই তোমার জীবন সুন্দর ও সার্থক হইয়া উঠিবে।

সারাংশঃ জীবনকে সুন্দর ও সার্থক করতে হলে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। জীবন পথে নানাবিধ বাধা-বিপত্তি আছে। বহু ত্যাগ ও তিতিক্ষার মাধ্যমে এসব বাধা – বিপত্তি অতিক্রম করে লক্ষ্য অর্জন করতে হবে। তাছাড়া মানুষের লোভও ভালো কাজের বাঁধা। এ লোভ লালসাকে জয় করতে পারলে জীবন সুন্দর ও সার্থক হয়ে ওঠে।

সারাংশ মাতৃস্নের তুলনা নাই

মাতৃস্নের তুলনা নাই। কিন্তুু অতি স্নেহ অনেক সময় অমঙ্গল বয়ে আনে। যে স্নেহের উত্তাপে সন্তানের পরিপুষ্টি, তাহারই আধিক্যে সে অসহায় হইয়া পড়ে। মাতৃস্নেহের মমতার প্রাবল্যে মানুষ আপনকে হারাইয়া আসল শক্তি মর্যাদা বুঝিতে পারে না। নিয়ত মাতৃস্নেহের অন্তরালে অবস্হান করিয়া আত্মশক্তির সন্ধান সে পায় না দূর্বল, অসহায় পক্ষী শাবকের মতো চিরদিন স্নেহাতিশয্যে আপনাকে সে একান্ত নির্ভরশীল মনে করে। ক্রমে জননীর পরম সম্পদ সন্তান অলস, ভীরু, দুর্বল ও পরনির্ভরশীল হইয়া মনুষ্যত্ব বিকাশের পথ হইতে দূরে সরিয়া যায়। অন্ধমাতৃস্নেহ সে কথা বুঝে না দুর্বলের প্রতি সে স্হির লক্ষ্য, অসহায় সন্তানের প্রতি মমতার অন্ত নাই অলসকে সে প্রাণপাত করিয়া সেবা করে ভীরতার দুর্দশা কল্পনা করিয়া বিপদের আক্রমণ হইতে ভীরুকে রক্ষা করিতে ব্যাপ্ত হয়।

সারাংশঃ মাতৃস্নেহের তুলনা হয় না। তবে স্নেহের প্রয়োজন থাকলেও অতিরিক্ত স্নেহ অকল্যাণ বয়ে আনে। স্নেহের আধিক্যে সে পরনির্ভরশীল ওঅসহায় হয়ে পড়ে। অন্ধ মাতৃস্নেহ তা বুঝে না বলে সন্তানের দুর্বলতাকে প্রশ্রয় দেয় এবং তাতে সন্তানের ক্ষতি হয়।

 

 

সারাংশ মানুষের মূল্য কোথায়?চরিত্র মনুষ্যত্ব, জ্ঞান ও কর্মে

মানুষের মূল্য কোথায়?চরিত্র মনুষ্যত্ব, জ্ঞান ও কর্মে। বস্তুুত চরিত্র বলেই মানুষের জীবনে যা কিছু শ্রেষ্ঠ তা বুঝতে হবে। চরিত্র ছাড়া মানুষের গৌরব করার আর কিছুই নেই। মানুষের শ্রদ্ধা যদি মানুষের প্রাপ্য হয়, সে শুধু চরিত্রের জন্য।অন্য কোনো কারণে মানুষের মাথা মানুষের সামনে নত হবার দরকার নেই। জগতপ যে সকল মহাপুরুষ জন্মগ্রহন করেছেন, তাঁদের গৌরবের মূলে এই চরিত্র শক্তি। তুমি চরিত্রবান লোক, এই কথার অর্থ এই নয় যে তুমি শুধু লম্পট নও। তুমি সত্যবাদী, বিনয়ী এবং জ্ঞানের প্রতি শ্রদ্ধা পোষণ কর; তুমি পরদুঃখকাতর, ন্যায়বান এবং মানুষের ন্যায় স্বাধীনতা প্রিয়। চরিত্রবান মানে এই।

 

সারাংশঃ চরিত্র, মনুষ্যত্ব, জ্ঞান ও কর্মে মানুষের মূল্য নির্ধারিত হয়। এর মধ্যে চরিত্রই শ্রেষ্ঠ। চরিত্র বলেই মানুষ অপরের শ্রদ্ধা অর্জন করে থাকে। চরিত্রবান বলতে সত্যবাদী, বিনয়ী, জ্ঞানী, ন্যায়বান, পরদুঃখকাতর ও স্বাধীনতাপ্রিয় সজ্জন ব্যক্তিকে বুঝায়।

 

 

 

সারাংশ আজকের দুনিয়াটা আশ্চার্যভাবে অর্থের বা বিত্তের উপরে নির্ভরশীল

আজকের দুনিয়াটা আশ্চার্যভাবে অর্থের বা বিত্তের উপরে নির্ভরশীল।লাভ ও লোভের দুর্নিবার গতি কেবল আগে যাবার নেশায় লক্ষ্যহীন প্রচন্ড বেগে শুধুই আত্ম বিবাশের মনুষ্যত্ব কতাটাই হয়ত লোপ পেয়ে যাবে। মানুষের জীবন আজ এমন এক পর্যায়ে এসে পৌছিছে, যেখান থেকে আর হয়ত নামবার উপায় নেই। এবার উঠবার সিঁরিটা না খুঁজলেই নয়।

 

সারাংশঃ আজকের বিশ্বে অর্থের গুরুত্ব বেশি বলে মানুষ লোভের বশে ধ্বংসের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এতে মনুষ্যত্ব বিসর্জনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।।মানুষের অধঃপতনের এটাই শেষ ধাপ, এখান থেকে অবশ্যই উদ্ধার পেতে হবে।

সারাংশ অতীতকে ভুলে যাও। অতীতের দুশ্চিন্তায় ভার অতীতকেই নিতে হবে

অতীতকে ভুলে যাও। অতীতের দুশ্চিন্তায় ভার অতীতকেই নিতে হবে।অতীতের কথা ভেবে ভেবে অনেক বোকাই মরেছে। আগামীকালের বোঝা অতীতের বোঝার সঙ্গে মিলে আজকে বোঝা সবচেয়ে বড় হয়ে দাঁড়ায়। ভবিষ্যৎকেও অতীতের মতো দৃঢ়ভাবে সরিয়ে দাও।আজই তো ভবিষ্যৎ কাল বলে কিছু নেই। মানুষের মুক্তির দিন তো আজই। আজই ভবিষ্যতের কথা যে ভাবতে বসে সে ভোগে শক্তিহীনতায়, মানসিক দুশ্চিন্তায়ও স্নায়বিক দুর্বলতায়। অতএব, অতীতের এবং ভবিষ্যতের দরজায় আগাল লাগাও-আর শুরু কর দৈনিক জীবন নিয়ে বাঁচতে।

 

সারাংশঃঅতীত ও ভবিষ্যতের কথা ভেবে যারা জীবন কাটায়, তারা নির্বোধ, তারা নানা দুশ্চিন্তায় ভোগে। বর্তমানকেই আমাদের কাজে লাগাতে হবে। কারণ বর্তমানের মধ্যেই আছে মানুষের মুক্তি। তাই অতীত ও ভবিষ্যতের কথা না ভেবে বর্তমানকেই সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া উচিত।

সারাংশ মানুষ সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ প্রাণী

মানুষ সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ প্রাণী।জগতের অন্যান্য প্রাণীর সহিত মানুষের পার্থকের কারণ-মানুষ বিবেক ও বুদ্ধির অধিকারী।এই বিবেক, বুদ্ধি ও জ্ঞান নাই বলিয়াই আর সকল প্রাণী মানুষ অপেক্ষা নিক্ষষ্ট।জ্ঞান ও মনুষ্যত্বের উৎকর্ষ সাধন করিয়া মানুষ জগতের বুকে অক্ষয় কীর্তি স্হাপন করিয়াছে, জগতের কল্যাণ সাধন করিতেছে; পশুবল ও অর্থবল মানুষকে বড় বা মহৎ করিতে পারে না।মানুষ বড় হয় জ্ঞান ও মনুষ্যত্বের বিকাশে।জ্ঞান ও মনুষ্যত্বের প্রকৃত বিকাশে জাতির জীবন উন্নত হয়। প্রকৃত মানুষই জাতীয় জীবনে প্রতিষ্ঠাও উন্নয়ন আনয়নে সক্ষম।

 

সারাংশঃ বিবেক ও বুদ্ধি মানুষকে সকল প্রাণী অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ করেছে। বিবেক-বুদ্ধির মাধ্যমে অর্জিত জ্ঞান ও মনুষ্যত্ব দ্বারা মানুষ পৃথিবীকে করেছে সুন্দর ও কল্যাণময়। জ্ঞান ও মনুষত্বের প্রকৃত বিকাশে মানুষ পরিণত হয় এবং জাতীয় জীবনে প্রতিষ্ঠা ও উন্নয়নে কার্যকর ভূমিকা পালনে সমর্থ হয়।